মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিসহ সব রাজবন্দির মুক্তি এবং সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রথম ভাষণে বাইডেন এ আহ্বান জানান। খবর আলজাজিরার।
জো বাইডেন বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উচিত হবে দ্রুত ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। সেনা অভ্যুত্থানে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে জাতিসংঘও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে বন্দিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতাগ্রহণের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাইডেন বলেন, একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের ইচ্ছাকে প্রত্যাখ্যান করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ফলকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উচিত জোর করে কুক্ষিগত করা ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া এবং সব রাজবন্দি, অ্যাক্টিভিস্ট ও কর্মকর্তাদের মুক্তি দেওয়া।’
মিয়ানমারের সেনাশাসকের প্রতি টেলিযোগাযোগের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে বৃহস্পতিবার দেশটিতে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন সেনাশাসকরা। জরুরি অবস্থা জারি থাকায় রাস্তায় নামতে না পারলেও সামাজিকমাধ্যমে অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে আসছিলেন দেশটির মানুষ। ৫৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার মিয়ানমারে অর্ধেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন।
অভ্যুত্থানের দুদিন পর সু চিকে ১৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযানের সময় তার ঘরে অবৈধ ওয়াকিটকি রেডিও পাওয়া গেছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
এর আগে সরকারের মন্ত্রীদের বরখাস্ত করে নতুন সরকার ঘোষণা করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের অল্প সময়ের পর একজন সাবেক জেনারেলকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।
সু চি সরকারের ২৪ মন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন ১১ মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে।
৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন অং সান সু চির দল। তবে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এক অভ্যুত্থানে সোমবার সেনাবাহিনী কমান্ডার মিন অং হ্লাইং ক্ষমতা দখল করেন।
আটক করা হয় নির্বাচনে জেতা এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ কয়েকশ আইনপ্রণেতা ও নেতাকে। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে এ অভ্যুত্থান ঘটান সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
Leave a Reply